অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ভেনেজুয়েলার বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিকোলাস মাদুরো জয়ী হয়েছেন। নির্বাচনী পরিষদের ঘোষিত আংশিক ফলাফল অনুযায়ী এ তথ্য জানানো হয়েছে।
তবে ভেনেজুয়েলার বিরোধীরা মাদুরোকে বিজয়ী বলে দেওয়া এই ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করেছে। সোমবার (২৯ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ভেনেজুয়েলার নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ ন্যাশনাল ইলেক্টোরাল কাউন্সিলের (সিএনই) প্রধান এলভিস আমোরোসো বলেছেন, ৮০ শতাংশ ব্যালট গণনা করা হয়েছে এবং প্রেসিডেন্ট মাদুরো ৫১.২ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। অন্যদিকে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী পেয়েছেন ৪৪.০২ শতাংশ ভোট।
সিএনই প্রধান এলভিস আমোরোসো প্রেসিডেন্ট মাদুরোর ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত।
এদিকে ভেনেজুয়েলার বিরোধী দল সিএনই-এর ঘোষণাকে প্রতারণামূলক বলে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তারা বলেছে, তাদের প্রার্থী এডমুন্ডো গঞ্জালেজ ৭০ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন এবং তিনিই আসলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন বলে তারা জোর দিয়েছেন।
বিরোধীরা বলেছে, তারা প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা, সেইসাথে এক্সিট পোল এবং দ্রুত গণনা অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে- এডমুন্ডো গঞ্জালেজ ক্ষমতাসীনদের চেয়ে ৪০ শতাংশ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন।
মূলত গত ১১ বছর ক্ষমতায় থাকার পর প্রেসিডেন্ট মাদুরোকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে গঞ্জালেজের পেছনে বিরোধী দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। নির্বাচনের আগে পরিচালিত জনমত জরিপেও দেখা গেছে, এডমুন্ডো গঞ্জালেজ নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট মাদুরোকে পরাজিত করবেন।
গত ২৫ বছর ধরে ভেনেজুয়েলায় ক্ষমতায় রয়েছে সমাজতান্ত্রিক পিএসইউভি পার্টি। প্রথমে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজের নেতৃত্বে এবং ২০১৩ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে শ্যাভেজের মৃত্যুর পর নিকোলাস মাদুরোর শাসনাধীনে রয়েছে দেশটি। দেশটির অনেক ভোটার বলছেন, তারা পরিবর্তন চান।
এছাড়া সরকার নির্বাচনে জালিয়াতি করতে পারে বলে ব্যাপক আশঙ্কা থাকলেও বিরোধীরা আশা করেছিল, তাদের নেতৃত্ব এতটাই বিশ্বাসযোগ্য হবে যে, মাদুরো প্রশাসনের ‘নির্বাচন কারচুপি’ করার যেকোনও প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ হয়ে যাবে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ভেনেজুয়েলার জাতীয় নির্বাচনী কাউন্সিলের ফলাফল ঘোষণা করার পর সেটি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ঘোষিত ফলাফল ভেনেজুয়েলার জনগণের ইচ্ছা বা ভোটকে প্রতিফলিত করে না বলে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুতর উদ্বেগ রয়েছে।
চিলির প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল বোরিকও বলেছেন, এই ফলাফলটিকে ‘বিশ্বাস করা কঠিন’ বলে মনে করছেন তিনি। এছাড়া উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট মাদুরো সরকার সম্পর্কে বলেছে: ‘প্রকৃত ফলাফল নির্বিশেষে তারা ‘জিততে’ যাচ্ছে।’
এদিকে জয়ী ঘোষণার পর মাদুরোর মিত্ররা তাকে বেশ দ্রুতই অভিনন্দন জনিয়েছে। কিউবার প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘চাপ ও কারসাজির বিরুদ্ধে জয়ী হয়েছে ভেনেজুয়েলার জনগণের মর্যাদা ও সাহসিকতা।’
অবশ্য প্রেসিডেন্ট মাদুরো আগেই বলেছিলেন, এবারের নির্বাচনে তিনি যেকোনও মূল্যে জিতবেন। এছাড়া সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না হওয়ার অভিযোগে ২০১৮ সালের নির্বাচনও প্রত্যাখ্যান করেছিল বিরোধীরা।
Leave a Reply